কলেজে থাকাকালীন তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা। জানিনা কেন তোমাকে আমার তখন এতটুকুও ভাল লাগত না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাসে তোমাকে দেখার সাথে সাথে মনে হয়েছিল, উফ! এ মেয়েটি এখানে কেন? না চাওয়া স্বত্বেও যাওয়া আসা তোমার সাথেই করতে হত। এরপর হয়তো কোন এক প্রয়োজনে তোমার সাথে আমার প্রথম কথা বলা। ধীরে ধীরে জানতে শুরু করি তোমার মাঝে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত তোমাকে । তোমার সবকিছুতেই যেন ছিল হাসি জড়ানো। কষ্টের মাঝেও তোমার সেই ঝলক মার্কা হাসি যেন থাকবেই। তোমার সেই দুরন্তপনা, স্বচ্ছতা সবই যেন আমাকে আকৃষ্ট করেছিল। তোমাকে বিরক্ত করলে তুমি যে চেহারাটা বানাতে তা যেন আজও আমার চোখে ভাসে। ভাবতেই হাসি পায়। কেমন অবুঝের মতই না প্রতিটি কথায় তুমি অভিমান করতে। তোমার প্রতিটি জিনিসই তোমার দিকে আমাকে আরো ঝুঁকিয়ে তোলে। তখন কলেজ জীবনের কথা মনে পড়লেই মনে অজান্তেই কেন জানি হেসে উঠতাম। তুমিও হাসতে।
 তোমার মনে আছে, শেষ বারের মত যখন আমরা একসাথে বাড়ি ফিরছিলাম সে রাতটির কথা? কেন জানি জোর করেই তুমি বসেছিলে জানালার পাশের সিটটাতে। তোমার এসব কারণ ছাড়া জেদের কথা মনে পড়লে আজও হেসে উঠি। তুমি কি জানো আমি তখন মনে মনে তোমাকে সেই কথাটি বলার জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম যে কথাটি শোনার জন্য তুমি অধীর আগ্রহে এতদিন অপেক্ষা করছিলে ? হ্যাঁ… আজো তোমাকে বলা হয়ে উঠেনি আমার মনের সেসব কথা। সত্যি কথা কি জান? তোমাকে যখন অনেক কাছ থেকে চিনতে শুরু করি, তখন তোমাকে ভাল না বেসে যেন পারিনি। অনেক আগেই তোমাকে বলতে চেয়েছিলাম এসব। কিন্তু বলব বলব করেও বলা হয়নি। ভয় পেতাম। যদি কথাগুলো শোনার পর আমার সঙ্গ, আমার বন্ধুত্বও তোমার কাছে অসহ্য মনে হয়… আমি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম তোমার সান্নিধ্যে। আজো আছি।

তোমাকে বলার জন্য সবে মাত্র মুখটা খুলেছিলাম আর তুমি কেন জানি “আদিত্য” বলে আর্তচিৎকার করে আমাকে সজোরে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দিলে। অবাক হয়েছিলাম আমি অনেক তখন। কিছুটা রেগেও গিয়েছিলাম। কিন্তু তোমার চোখের সেই ভয় আজো আমাকে কাঁদায়। তুমি কি বুঝতে পেরেছিলে কি হতে যাচ্ছে? জানই তো, তোমার চোখের পানি আমার সহ্য হয়না। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের জন্য মনে হয়েছিল তুমি অনেক কেঁদেছ। কিছু একটা নিয়ে অনেক ভয় পেয়েছিলে। কি ছিল সেটা? কেন তুমি আমাকে এভাবে দূরে ঠেলে দিয়েছিলে? কিভাবে তুমি পারলে? এরপর তুমি আমার সাথে আর যোগাযোগ করনি। নতুন কেউ কি এসেছিল তোমার জীবনে যার কারণে তুমি আমাকে এভাবে ভুলে গেলে? না না না। তা হয়না। কিন্তু এ ছয় মাস তোমার কি একটা বারের জন্যও আমাকে মনে পড়েনি? কখন ভাবতেও পারিনি তুমি এমন করবে। অনেক রেগে আছি তোমার উপর। ক্যাম্পাসে আমরা কত মজাই না করতাম একসাথে। তোমাকে ঘিরে কত স্বপ্ন দেখেছিলাম। মনে আছে তোমার?
তুমিতো কোন খবরই রাখনি, সেদিন আমাকে সরিয়ে দেয়ার পর কি হয়েছিল ? আমার অনেক কিছুই মনে নেই। পরদিন শুনলাম আমাদের বাসটি নাকি একটি খাদে পরে গিয়েছিল। বেপরোয়া চালায় বলে তুমি কখনও এধরনের বাসে উঠতে চাইতেনা। আসলে তুমিই ঠিক ছিলে। এখন বুঝতে পারি। তোমার কথা শোনা উচিত ছিল । সে রাতে সবাই মোটামুটি আহত হয়েছিল। আমার তো বলতে গেলে কিছুই হয়নি। শুধু মাথা একটু ফেটে গিয়েছিল। ফাটবেনা ? তুমি যে জোরে ধাক্কাটা না দিয়েছিলে। তোমার গায়ে তখন এত শক্তি কোথা থেকে এল ভেবে আমি এখনও অবাক হই। শুনেছিলাম ঐ রাতে নাকি একটা মেয়ে মারা গিয়েছিল। আমি দেখতে গিয়েছিলাম তাকে। সাদা কাপড়ে জড়ানো ছিল তার দেহ। কিন্তু আম্মা কেন জানি আমাকে তার কাছে যেতেই দেয়নি। মা দের এধরনের অযথা জেদ দেখলেই রাগ লাগে। শুধু চুল গুলো দেখেছিলাম। তোমার মতই লম্বা চুল ছিল মেয়েটির। অনেক চিন্তিত ছিলাম আমি তোমাকে নিয়ে। তারপর আরো কত কিছু হয়ে গেল। তুমি তো একটি বারের জন্যও খবর নাওনি। আচ্ছা, এটা নিয়ে পরে ঝগড়া করব। আগে সব কথা শেষ করি।
জানো আমাকে ওরা এ ছয়মাস কোথায় রেখেছিল? হাসপাতালের একটি বন্ধ কক্ষে। আশেপাশের সবাই ছিল অসুস্থ। সাদা কাপড় পরা ওই লোকগুলো মাঝে মাঝে নিজে নিজেরাই হাসে, কথা বলে। মায়া হচ্ছিল তাদের দেখে। এসব জিনিস সবসময় তোমাকে আবেগাপ্লুত করে তুলত। তোমার সাহচর্য আমাকে অনেকটা তোমার মতই বানিয়ে দিয়েছিল। বাসার কথা খুব মনে পড়তো। যেতে চেয়েছিলাম আমি বাসায় অনেকবার। তোমার খবরও তো নিতে হবে আমাকে। জানো, চুপি চুপি তোলা তোমার অনেক ছবি ছিল আমার কাছে। কিন্তু তোমার সব স্মৃতি, সব ছবি ওরা কোথায় জানি লুকিয়ে ফেললো। খুঁজেই পাইনা। কিন্তু ওরা জানে না, আমার সাথে এখনো তুমি আছ। লুকিয়ে রেখেছি তোমার একটি ছবি যেটা আমার পকেটে লুকানো ছিল। আর কিছুই নেই তোমার আমার কাছে এখন। শুধু ওই একটি ছবি।
আজকে আমি আবার বাসে করে বাড়ি যাচ্ছি। আমাকে দেখলে এখন তুমি অনেক খুশি হতে। তোমার পছন্দ করা সেই শার্টটি পরেছি আজ। কিন্তু আমার পাশে আর তুমি নেই আজ। অনেক মনে পরছে তোমাকে। তোমাকে যে অনেকগুলো কথা বলা হয়নি, তোমার ছবিটা এইতো পকেটেই ছিল আমার। [মনের অজান্তেই পকেট হাতড়াতে থাকে] আহহহহ! পেয়েছি! তুমি কি এখনও আগের মতই আছো? নাকি আরেকটু মুটিয়ে গিয়েছো? বেশি করে খাওয়া উচিত তোমার। আরেকটু মোটা হলে তোমাকে যেন আরো বেশি সুন্দর দেখাতো। আচ্ছা তোমার চুল কি আরো লম্বা হয়েছে? অনেক পছন্দ তোমার চুলগুলো আমার। যত্ন নিও।
জানিনা কেন বাসটি থেমে গেল? ওহ হ্যাঁ! পৌঁছে গিয়েছি মনে হয়। কিন্তু কোথায় থামাল? এইটা কি আমার বাসা? চিনতে পারছি না তো! নাহ, এইখানে নামবো না। তোমাকে বলার আমার আরও অনেক কথা আছে। আসল কথাটাই তো বলা হয়নি। এই যে ভাই। শুনেন। আমি এখানে নামবো না! আপনারা আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন? আশ্চর্য। আপনারা আমার কথার জবাব দিচ্ছেন না কেন? ছি! এইভাবে টানছেন কেন আমাকে? দেখেন ভাই, বেশি হচ্ছে কিন্তু! এগুলো কিন্তু অভদ্রতা।
[ টানা – হেঁচড়ার কারনে বেকায়দায় বাস থেকে পড়ে যায় সে। হাতের ছবিটি যেয়ে পড়ে তার থেকে কিছু দূরে। ছবিটির উপর দিয়ে হেঁটে যায় যাত্রীরা। ] লাবণ্য………….. আমি বুঝতে পারছিনা লোকগুলো আমার সাথে এমন কেন করছে? এই যে ভাই, কি করছেন? আমি যাবো না বললাম তো আপনাদের সাথে। সমস্যা কি আপনাদের? এই যে! আপনারা আমাকে এইভাবে আঁকড়ে ধরেছেন কেন? কারা আপনারা? আমি কি চিনি আপনাদের? [ ইনজেকশনটা দেওয়ার পর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হতে থাকে সে। তাকিয়ে থাকে দূরে পড়ে থাকা সেই ছবিটির দিকে। অস্পষ্ট স্বরে বলে উঠে ]
“ভালবাসি !”

‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’-এ তিনটি শব্দে কেউ আপনার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করলেও তা কি সত্যিকার ভালোবাসা ? অনেকেই অভিযোগ করেন, ‘এ পৃথিবীতে কেউ আমাকে ভালোবাসে না’। সত্যিকার অর্থেই সে আপনাকে ভালোবাসে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত ? তাহলে এ লেখায় দেওয়া সাতটি পয়েন্ট মিলিয়ে নিন। বুঝে নিন, সে আপনাকে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসে কি না।



১. অসুস্থ হলে আপনার খবর রাখে

আপনার প্রতি তার ভালোবাসা আছে, এ বিষয়টি বোঝার অন্যতম উপায় হলো আপনি অসুস্থ হলে সে আপনার খবর নেবে। এ সময় আপনার যে কোনো প্রয়োজনে তাকে ডাকলে কাছে পাবেন। আপনার দুঃসময়ে তার এগিয়ে আসা দেখেই বুঝে নেবেন, সে আপনাকে ভালোবাসে।

২. আপনাকে রক্ষা করে

যে আপনাকে ভালোবাসে সে সব সময় আপনাকে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করবে। আপনাকে নিয়ে কেউ হাসাহাসি করলে সে তাতে অংশ নেবে না, বরং তাদের বিরুদ্ধেই থাকবে। এমনকি আপনি তার কাছ থেকে সাহায্য না চাইলেও সে আপনার সাহায্যে এগিয়ে আসবে।

৩. আপনার পরিবারকে সম্মান করে

আপনার পরিবার আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর আপনাকে যে ভালোবাসে সে আপনার পরিবারকেও সম্মান করবে। আপনার বাবা-মা কিংবা ভাই-বোনকে সে সম্মান করবে। তাদের সঙ্গে যদি কথা বলতে হয় তাহলে সে অতি সম্মানের সঙ্গে তা করবে।

৪. আপনাকে উৎসাহ দেয়

আপনাকে যে ভালোবাসে সে আপনার নানা অর্জন দেখে খুশি হবে এবং আরও অর্জনে আপনাকে উৎসাহিত করবে। আপনি তাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছেন, এ জন্য সে মোটেও দুঃখ পাবে না। তার বদলে সে আপনার অর্জনে সহায়তা দিতে এগিয়ে আসবে এবং সে জন্য গর্ববোধ করবে।

৫. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে

আপনার সঙ্গে জড়িয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে কেউ কি এগিয়ে এসেছে? যদি এগিয়ে আসে তাহলে বুঝে নিন, সে আপনার প্রতি দুর্বল, আপনাকে ভালোবাসে এবং আপনার সঙ্গে জীবন অতিবাহিত করতে চায়।

৬. আপনার মতামতের মূল্য দেয়

যে আপনাকে ভালোবাসে সে আপনার মতামতেরও মূল্য দেয়। আপনার কথা সে সময় নিয়ে শুনবে এবং সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। যদি কেউ আপনার মতামতকে মূল্য না দেয় তাহলে এর বিপরীত অবস্থা হবে। কিন্তু আপনাকে যদি ভালোবাসে তাহলে সে আপনাকে একজন বুদ্ধিমান বলেই মনে করবে।

৭. মনে রাখে

যে আপনাকে ভালোবাসে সে আপনার জন্মদিনসহ নানা তারিখের কথা খেয়াল রাখবে। এ ছাড়া অন্য নানা উপলক্ষেও সে আপনাকে অভিনন্দন জানাতে ভুলবে না। (ইত্যাদি)


শৈশবে এক মেঘবালিকার দেখা পেয়েছিলাম।
মেঘে মেঘে ছুটে বেড়াত মেঘবালিকা।
আমাকেও ভাসিয়ে নিয়ে যেত সেই মেঘের দেশে।
এ যেন অন্যজগত চারিদিকে ফেনা ফেনা মেঘ, যেন স্বপ্নের এক দেশ।

শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে আমি এখন যৌবনে,
মেঘবালিকাও আর আগের মত নেই,
সবাই তাকে এখন বৃষ্টি বলেই জানে।
আমার হৃদয় যখন খরতাপে উতপ্ত,
ঠিক তখন বৃষ্টি তার শীতল পরশে আমায় ভিজিয়ে দিত।
সে কি বৃষ্টি! উন্মাতাল এলোমেলো বৃষ্টি!!!
আহা!! কি যে সুখ!!!

শ্রাবণের অঝোর বৃষ্টি এবার বর্ষা রূপে দেখা দিল!
বর্ষার অবিরাম বর্ষণে সব কিছু ভিজে একাকার.........
সময় সময় ভাবতাম, আহ!!! বর্ষা! এবার শান্ত হও।
কিন্তু বর্ষা শান্ত হয়নি, থামেনি সে.........

এখন তার নাম বন্যা!!!!
বানের জলে আমায় ভাসিয়ে নিয়ে এসেছে শুনশান এক নিঃসঙ্গ দ্বীপে।
যেখানে আমার সঙ্গী শরতের নীল আকাশ, আর সাগরের নীল রঙ।
নীলে নীলে আমিও নীল হয়ে তবু জীবিত।

মেঘবালিকা-বৃষ্টি-বর্ষা-বন্যা যে নামেই ডাকি, কেউ নেই এখন।
অতঃপর সে এখন নারী!!!!
তার স্বপ্নলোকে বসৎ করে ভীন রাজ্যের রাজপুত্র,
যে তার ইচ্ছা আকাঙ্খাগুলোকে সোনায় মূরিয়ে দেবে!

MARI themes

Powered by Blogger.